কঠোর লকডাউনের আজ ১২তম দিন
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
করোনা রোধে সারাদেশে সরকারী বিধিনিষেধ কঠোর লকডাউনের ১২ তম দিন চলছে আজ সোমবার। সারদেশের ন্যায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কঠোর লকডাউনে বেড়েছে প্রশাসনের তৎপরতা।
ফুলবাড়ীতে প্রতিদিন বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। মৃতুর তালিকায় যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম। কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠেও তৎপর রয়েছে উপজেলা প্রশাসন, সেনা বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ আইন ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে প্রতিদিন পরিচালিত হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আদায় করা হচ্ছে জরিমানা।
এদিকে, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান মিল্টন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেছেন, কর্মহীন দুস্থদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হচ্ছে। তবে লকডাউন অমান্যকরে চোর-পুুলিশ লুকোচুরি খেলায় অংশ নেওয়া দোকানদারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যেই পৌরশহরের বেশ কয়েকটি দোকান চোর-পুলিশ লুকোচুরি খেলোয়াড় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব দোকানের মালিকের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে এতকিছুর পরেও মানুষের মাঝে নেই এর কোনো প্রভাব। চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক ছাড়াই অবাধে চলাফেরা করছে মানুষ। প্রশাসনের টহল চলে গেলেই খোলা হচ্ছে দোকানপাট। এমন চোর-পুলিশ লুকোচুরিতে দোকানপাট বন্ধ রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। দূরপাল্লাসহ আন্তঃজেলার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই অবাধে যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে অটোরিকশা, ভ্যান, মাহিন্দ্রা।
উপজেলার প্রতিটি হাটবাজারের মাছ ও কাঁচাবাজারে নেই লকডাউনের প্রভাব। আম-কাঁঠালের বাজারে দেখা যায় মানুষের উপচেপড়া ভিড়। প্রশাসনের তৎপরতা কম থাকায় গ্রামীণ হাট-বাজারগুলোতে নেই কোনো লকডাউনের প্রভাব। শহরে দিনের চেয়ে সন্ধ্যায় মানুষের চলাচল বেড়ে যায়। এসব হাট-বাজারে মাস্ক ছাড়া গা ঘেঁষাঘেঁষি করে চলছে কেনাবেচা।
এদিকে জেলার সর্বত্র আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে জ্বর, সর্দি, কাশির প্রভাব। এ সংক্রমণকে করোনা বলে ধরে নিচ্ছেন স্থানীয়রা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব ব্যক্তি জানান, সামাজিক লজ্জা থেকে অনেকেই করোনার পরীক্ষা করাচ্ছেন না। এর ফলে গ্রামীণ জনপদের ঘরে ঘরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে জ্বর, সর্দি, কাশি রোগের প্রাদুর্ভাব। তারা আরও জানান, ফার্মেসিগুলোতে দেখা দিয়েছে প্যারাসিটামল, এন্টিহিস্টামিনসহ কফ সিরাপের সংকট। এদিকে চলমান লকডাউনে বড় ধরনের সংকটে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীসহ নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ। কর্মসংস্থান হারানো শ্রমজীবী মানুষসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কারও কাছে হাত পাততে না পারায় দিন পার করছেন মানবেতর ভাবে।