হত্যার কাজে ব্যবহৃত দু’টি সুইজ গিয়ার চাকু ও টাই ক্যাবল উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলা প্রতিদিন : রাজধানীর ডেমরায় সিএনজি চালক আলী হোসেন হত্যা মামলার অন্যতম আসামী বাঘাসহ এজাহারভুক্ত তিন আসামীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন, নুর হোসেন ওরফে বাঘা (৪৩), তার সহযোগী লিংচাঁন ওরফে নীলচাঁন মিয়া (৩৫) ও মোঃ আঃ মান্নান ওরফে মন্নান (৩৫)।
শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে র্যাব-১০ এর একটি দল এবং র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার শনির আখড়া ও নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানার তারাবো এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করতে সক্ষম হয়।
এসময় তাদের নিকট থেকে দস্যুতা ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত দু’টি সুইজ গিয়ার চাকু ও টাই ক্যাবল উদ্ধার করা হয়।
আজ শনিবার দুপুরে র্যাব-১০ এর কার্যালয়ে অনুষ্টিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ এর কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) এডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন এসব তথ্য জানান।
ঘটনার বিবরন উল্লেখ করে তিনি জানান, গত ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ দিবাগত রাত ১ টার দিকে সিএনজি চালক আলী হোসেন (৬০) যাত্রী পরিবহনের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেলার মোক্তারপুর ব্রীজ এলাকায় অবস্থান করছিল।
এ সময় অজ্ঞাতনামা ৪ জন ছিনতাইকারী তাদের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী যাত্রীবেশে রাজধানীর কদমতলী থানার মাতুয়াইল সাদ্দাম মার্কেটের সামনে যাওয়ার জন্য কৌশলে ৩৫০ টাকায় সিএনজিটি ভাড়া করে।
তখন সিএনজি চালক আলী হোসেন তাদের কথামত সিএনজি চালিয়ে মাতুয়াইল যাওয়ার পথে ঘটনার দিন রাত আনুমানিক ২ টার দিকে রাজধানীর ডেমরা থানার সাইনবোর্ড মদিনা চত্বর এলাকায় পৌঁছালে উক্ত ছিনতাইকারীরা সিএনজি চালক আলী হোসেনকে বেধড়ক মারধর শুরু করে।
এসময় সিএনজি চালকের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ছিনতাইকারীরা সিএনজি চালক আলী হোসেন’কে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় আল আমিন নামে একজন ছিনতাইকারীকে স্থানীয় লোকজন হাতেনাতে আটক করতে সক্ষম হয়। এসময় তার সহকর্মীরা সিএনজি নিয়ে পালিয়ে যায়।
র্যাব বলছে, ঘটনাটি জানতে পেরে ডেমরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আটককৃত ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে এবং মৃত আলী হোসেনের লাশ সুরতহাল প্রস্তুতপূর্বক ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠায়। এঘটনায় মৃত আলী হোসেনের ছেলে আবু ইউসুফ (২০) বাদী হয়ে একটি দস্যুতাসহ হত্যা মামলা দায়ের করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা এ হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃতরা সিএনজি ও অটোরিক্সা ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় অটোরিক্সা ও সিএনজি ছিনতাই করে আসছিল।
এই চক্রটি রাতের বেলায় বয়স্ক ও দুর্বল সিএনজি/অটোরিক্সা চালকদের টার্গেট করে তাদের নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যেত। সেখানে নিয়ে সিএনজি/অটোরিক্সা চালক’কে মারধর প্রয়োজনে হত্যা করে সিএনজি ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ছিনতাই করে নিয়ে যেত। এছাড়া তারা এই মাসে ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ এলাকা থেকে একাধিক সিএনজি ছিনতাই করেছিল বলে স্বীকার করেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।