নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলা প্রতিদিন : অতীতের শোকেস ইভেন্টের অভূতপূর্ব সাফল্যের সূত্র ধরে, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ বারের মতো শোকেস মালয়েশিয়া ২০২৩-এর আয়োজন করেছে। এই আয়োজন মালয়েশিয়া এক্সটারনাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (MATRADE), মালয় চেম্বার অফ কমার্স মালয়েশিয়া (DPMM), মালয়েশিয়া সাউথ-সাউথ অ্যাসোসিয়েশন (MASSA), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (BIDA), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (BEZA), মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার হাইকমিশন এর সরাসরি সহযোগীতায় আয়োজিত হচ্ছে।
দুই দিনের এই আয়োজনে সমসাময়িক বিষয়ের উপর বেশ কিছু সেমিনার, বিএমসিসিআই বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস, মডেস্ট ফ্যাশন শো, এবং মালয়েশিয়ার পণ্য প্রদর্শন সহ গ্র্যান্ড গালা নাইট অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব তপন কান্তি ঘোষ, সিনিয়র সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম।
মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মোঃ হাশিম সম্মানিত অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শুরুতে শোকেস আয়োজক কমিটির সভাপতি সৈয়দ এ হাবিব সবাইকে স্বাগত জানান এবং শোকেস মালয়েশিয়াকে সফল করার জন্য করার জন্য সকল স্পনসর, কো-স্পন্সর এবং অংশগ্রহণকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এফবিসিসিআই-এর নবনির্বাচিত সভাপতি মাহবুবুল আলম শোকেস মালয়েশিয়ার গ্র্যান্ড গালা নাইটের আনন্দময় মুহুর্তগুলো উপভোগ করেন এবং বিএমসিসিআই এর সাথে তার দীর্ঘদিনের সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি তার হৃদয়ের গভীর থেকে শোকেসের সাফল্য কামনা করেন।
বিএমসিসিআই সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির তার বক্তৃতায় বলেন, “মালয়েশিয়া শুধু আমাদের পণ্যের ভবিষ্যৎ বাজার নয়, অনেক কারণে আমাদের কৌশলগত অংশীদারও। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ৬ষ্ঠ শোকেস মালয়েশিয়া ২০২৩, বিপুল সংখ্যক ব্যবসায়ী, পেশাদারদের আকৃষ্ট করবে একইসাথে উচ্চ শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, আইসিটি, পর্যটন, অটোমোবাইল ভিত্তিক ব্যবসার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়াকে প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিতে উৎসাহিত করবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ তার বক্তৃতায় বলেন, “দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এটা স্পষ্ট যে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার সাথে দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য ঘাটতিতে ভুগছে যা প্রতি বছরই বাড়ছে।
আমরা ২০২১-২২ অর্থবছরে মালয়েশিয়ায় ৩৩৭.৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছি এবং একই বছরে বাংলাদেশে ৩৪৭১.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করেছে। বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বিএমসিসিয়াই যৌথভাবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে আর বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে।”
মালয়েশিয়ান হাইকমিশনার হাজনাহ মোঃ হাশিম বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, মালয়েশিয়া দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে মূল্যায়ন করে। তিনি বলেন, “এটা স্পষ্ট যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছ থেকে মালয়েশিয়া, বাংলাদেশে ব্যবসা স্থাপনের বিষয়ে অনেক নীতিগত সহায়তা পেয়েছে এবং আমি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য বিএমসিসিআই-এর প্রচেষ্টাকে আন্তরিকভাবে প্রশংসা করি”
এই শোকেসের মূল উদ্দেশ্য হল এশিয়ায় একটি নির্ভরযোগ্য ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক মহলের কাছে মালয়েশিয়ার ভাবমূর্তি উন্নত করা যেখানে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিএমসিসিআই) মাধ্যমে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সাথে মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের একটি সংযোগ তৈরী হবে।
উত্পাদনমুখী শিল্পে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আকিজবশির গ্রুপ, সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে জিডিএসিস্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ফারজানা চৌধুরী, দেশের ব্যবসা ও বাণিজ্যের আন্তরজাতিক সম্প্রসারণের স্বীকৃতিস্বরূপ ট্রেড অ্যান্ড কমার্স বিভাগে- প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, এবং সার্ভিস সেক্টরে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে ভূমিকা রাখায়- রবি আজিয়াটা লিমিটেডকে বিএমসিসিআই বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষন ছিল হালাল ও শালীন পোষাকের ফ্যাশন শো, যেখানে মডেস্ট ফ্যাশন ব্র্যান্ড “তহুর” তাদের পণ্য প্রদর্শন করে। এছাড়াও মালয়েশিয় সংগীত, ঐতিহ্যবাহী নাচের প্রদর্শন, অডিও-ভিজ্যুয়াল ইন্টারএকটিভ শো উপস্থিত দর্শক ও অতিথিদের কাছে প্রশংসিত হয়।
