নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলা প্রতিদিন: দেশের স্বনামধন্য ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড আজ বিশ্বের প্রথম জেনেরিক মলনুপিরাভির (ব্র্যান্ড নাম ইমোরিভির) বাজারজাত শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে।
মলনুপিরাভির এমএসডি (Merck, Sharp & Dohme) ও রিডজব্যাক বায়োথেরাপিউটিকস কোম্পানীদ্বয়ের গবেষণায় উৎপাদিত একটি মুখে সেবনযোগ্য ওষুধ, যা অতিসম্প্রতি কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য অনুমোদন পেয়েছে। বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঔষধ প্রসাশন অধিদপ্তরের জরুরী ব্যবহারের জন্য অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ থেকে বেক্সিমকো ফার্মা ইমোরিভির নামে ওষুধটি বাজারজাত শুরু করেছে।
যুক্তরাজ্যের ‘মেডিসিনস এন্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি অথোরিটিস’ গত ৪ই নভেম্বর কোভিড-১৯ চিকিৎসায় বিশ্বের প্রথম মুখে সেবনযোগ্য ওষুধ হিসেবে মলনুপিরাভিরের অনুমোদন দেয়।
এছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা যেমন ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি ও ইউনাইটেড স্টেটস’স ফুড এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন দ্বারা মলনুপিরাভিরের অনুমোদন পর্যালোচনাধীন রয়েছে।
মলনুপিরাভির মুখে সেবনযোগ্য হওয়ায় বাড়িতে থেকে করোনা রোগীর চিকিৎসা সম্ভব। এর ফলে কোভিড-১৯ চিকিৎসা ব্যবস্থায় একটা বড় পরিবর্তন আসতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, করোনা রোগীর বারবার হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাওয়ার প্রয়োজন কমে আসতে পারে, যার ফলে একজন রোগীর থেকে অন্যদের সংক্রমিত হওয়ার হার অনেক কমে আসবে।
এমএসডি কর্তৃক প্রকাশিত গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়, মলনুপিরাভির কোভিড আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে নেয়া ও মৃত্যুহার অর্ধেকে কমিয়ে আনে।
পরীক্ষায় দেখা যায়, মলনুপিরাভির দিয়ে চিকিৎসা করা রোগীদের মধ্যে মাত্র ৭.৩ শতাংশ রোগীকে ২৯ দিন পর হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে, যেখানে প্লাসেবো নেয়া রোগীদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তির হার ১৪.১ শতাংশ। মলনুপিরাভির ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি করতে বাঁধা দেয়। ফলে, আক্তান্ত ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসের মাত্রা কমে আসে এবং রোগের জটিলতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায়।
জীবন রক্ষাকারী মলনুপিরাভিরের জেনেরিক ভার্সন বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বেক্সিমকো ফার্মা করোনা চিকিৎসায় নতুন সুযোগ সৃষ্টি করতে ও চিকিৎসা ব্যয় অনেক কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে। বিশেষভাবে, দুর্বল রোগ প্রতিরোধক্ষমতা সম্পন্ন এবং এখনও টীকা পায়নি এমন ব্যক্তিদের জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব নাজমুল হাসান এমপি বলেন, “করোনা মহামারীর শুরুতে বিশ্বের প্রথম জেনেরিক রেমডেসিভির বাজারজাত করার পাশাপাশি, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় বিশ্বের প্রথম মুখে সেবনযোগ্য অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ মলনুপিরাভিরের জেনেরিক সংস্করণ বাজারজাত করা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়, এবং এটি কোভিড-১৯ চিকিৎসায় বেক্সিমকো ফার্মার দ্রুত সাড়া দেয়ার সক্ষমতা প্রমাণ করে।
বেক্সিমকো ফার্মার জন্য এটি একটি বিশাল অর্জন এবং আমরা বিশ্বাস করি যে, করোনা মহামারী মোকাবেলায় আমাদের উৎপাদিত ওষুধটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে এবং যেখানে ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা সীমিত। সামাজিক দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা সরকারের কর্মকান্ডে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদানের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।