এম এ মান্নান, লালমনিরহাট : পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে লালমনিরহাটের দেউতি এলাকায় আওয়ামীলীগ নেতার ছেলে ও তার লোকজন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আহত করে ৪ সাংবাদিককে। মামলা হলেও এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি কেউ। এঘটনায় সাংবাদিক সমাজে প্রতিবাদের ঝর উঠেছে লালমনিরহাটে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ এর সভাপতি আজিজুর মন্ডল এর ছেলে দুই সন্তানের জনক সুলতান মন্ডল একই ইউনিয়নের সিন্দুরিয়া দেউতি এলাকার বদরুল হাসানের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী লাভলী বেগম(২৮) কে গত ৭ আগষ্ট রাত ৮টায় তুলে এনে বিয়ে করে। লাভলী বেগমের স্বামী বদরুল স্ত্রীর কোন খোঁজ না পেলে লালমনিরহাট সদর থানায় গত ৯ আগষ্ট একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন। এদিকে এঘটনায় গত ৯ আগষ্ঠ বিকেলে সুলতান মন্ডলের প্রথম স্ত্রী রোজিনা বেগম(২২)বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
এসব ঘটনায় শনিবার ১২ আগষ্ট খবর সংগ্রহে দেউতিরহাট এলাকায় যায় লালমনিরহাটের যমুনা টেলিভিশনের প্রতিনিধি আনিছুর রহমান লাডলা, ক্যামেরা পারসন আহসান হাবিব, এখন টিভির মাহফুজুর রহমান বকুল ও প্রথম আলোর আব্দুর রব সুজন। তারা তথ্যাদী সংগ্রহের পর লালমনিরহাটে ফিরতে থাকে। এঅবস্থায় সুলতান মন্ডল তার লোকজন সহ সাংবাদিকদের উপর দেউতি এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। কেড়ে নেয় যমুনা টেলিভিশন সাংবাদিকের ক্যামেরা ট্রাইপট, মোবাইল ও হেলমেট।
এসময় আহত হয় ওই চার সাংবাদিক। একপর্যায়ে পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আজিজুর রহমান ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিকদের পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দিতে থাকেন। ঘটনস্থল থেকে প্রাণেবেঁচে দ্রুত পালিয়ে এসে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় তারা। এদের মধ্যে যমুনা টিভির প্রতিনিধি আনিছুর রহমান লাডলার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ভর্তি করা হয় লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ৪ সাংবাদিককে আহত করার ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝর উঠে সাংবাদিক মহলে। তারা ঘটনার সাথে জড়িতদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতারের ও সাস্থীর দাবীতে শনিবার বিকেলে মানব বন্ধন করেন স্থানীয় মিশন মোড়ে। এছাড়াও লালমনিরহাটের কালীগঞ্জেও মানব বন্ধন করেন সাংবাদিকেরা। সাংবাদিক নেতারা বলেন, অবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন তারা।
এঘটনায় যমুনা টেলিভিশনের লালমনিরহাট প্রতিনিধি আনিছুর রহমান লাডলা শুক্রবার রাতেই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আজিজুর মন্ডল তার ছেলে মুল হোতা সুলতান মন্ডল সহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা ২১ জনকে আসামী করে লালমনিরহাট সদর তানায় একটি মামলা দায়ের করলে সেটি রিকর্ড করা হয়। এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে না পারলেও উদ্ধার করেছে ছিনিয়ে নেয়া ক্যামেরা হ্যালমেট ও ট্রাইপট। পুলিশ জানায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।