নিজস্ব প্রতিবেদক: ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে হবে। কয়েকজন ব্যক্তির কাছে ইসলাম ধর্মকে লিজ দেওয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাট্যজন আলী যাকের ও ফুটবলার বাদল রায়ের স্মরণে শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এই স্মরণসভার আয়োজন করে। ভাস্কর্য ইস্যুতে হক্কানি আলেমদের ঈমানি দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আপনারা নীরব থাকবেন না। হক্কানি আলেমরা নায়েবে রাসুল হিসেবে এগিয়ে আসুন, সঠিক কথা বলুন। ভাস্কর্য ইসলামে হারাম নয়, সেটা জাতিকে বলুন। যারা আলেম সমাজ, তারা যদি কথা না বলে, মানুষ ধরে নেবে ইসলাম জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেয়। সুতরাং হক্কানি আলেমদের এগিয়ে আসতে হবে।’ তিনি বলেন, ইসলামের সঠিক তথ্য সকলকে জানাতে হবে। মূর্তি ও ভাস্কর্যও এক জিনিস নয়। ইসলামে ভাস্কর্য নিষেধ বা হারাম নয়। বিশ্বের প্রায় সব ইসলামিক রাষ্ট্রে প্রাচীনকাল থেকেই ভাস্কর্য রয়েছে। এমনকি তিনটি ইসলামিক রাষ্ট্র- ইরান, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে প্রচুর ভাস্কর্য রয়েছে। সরকারকে অনুরোধ করবো, পৃথিবীর সব মুসলিম অধ্যুষিত দেশের ভাস্কর্য টেলিভিশনের মাধ্যমে জনগণকে দেখানো হোক। দূতাবাসের মাধ্যমে সব ভাস্কর্য সংগ্রহ করে প্রচার করা হোক। তাহলে মানুষ আসল ঘটনা বুঝবে।’ মন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালে গাজীপুর চৌরাস্তায় মুক্তিযোদ্ধার হাতে রাইফেল ও গ্রেনেড সম্বলিত ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়, যা অদ্যাবধি বিদ্যমান। কিন্তু এখন যেসব ধর্ম ব্যবসায়ী অপশক্তি ভাস্কর্যের বিষয়ে কথা বলছে তাদের উদ্দেশ্য কী? তিনি বলেন, ‘ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে হবে। কয়েকজন ব্যক্তির কাছে ধর্ম লিজ দেওয়া হয় নাই। কত জায়গায় ভাস্কর্য আছে, এতদিন কেউ কিছু বলেনি। হঠাৎ তারা এটা নিয়ে কথা বলছে। তাদের ধৃষ্টতা কতটুকু হয়েছে। তাও করিমুদ্দিন সলিমুদ্দীনকে নিয়ে নয়, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, তাদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলার সময় এখনই।’ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আরও বলেন, ‘তাদের এজেন্ডা কী? এজেন্ডা একটাই। যখন তারা দেখলো, শেখ হাসিনা সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন, তখন তারা এ ইস্যু সামনে নিয়ে আসলে। যখন আজ জাতির অস্তিত্ব মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হুমকির মুখে। সংবিধানে আঘাত এসেছে। আসুন আমরা এক হয়ে লড়াই করি। বঙ্গবন্ধুর সন্তানরা এক হয়ে তথাকথিত ধর্ম ব্যবসায়ী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়ি। তারা বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে যে কথা বলেছে, অমার্জনীয় অপরাধ করেছে। যদি বক্তব্য প্রত্যাহার না করে, তাহলে কী করতে হবে, জানা আছে। সতর্ক হয়ে যান।’ বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা চিত্ত রঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা, লায়ন গণি মিয়া বাবুল, এমএ করিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল বাহার টিপু ও কণ্ঠশিল্পী এসডি রুবেল প্রমুখ।
Wednesday , 2 December 2020 | [bangla_date]
